জনরোষ নাকি অতিরিক্ত ঘুমের ওষুধ, চিতাবাঘের মৃত্যুর কারণ নিয়ে ধোঁয়াশা

রাজকুমার, আলিপুরদুয়ার: ফের চিতাবাঘের হামলায় জখম হলেন দুই আলু শ্রমিক ও এক সিভিক ভলান্টিয়ার। বৃহস্পতিবার ফালাকাটার রাইচেঙ্গা গ্রামে ঘটনাটি ঘটে। তবে সহজে রেহাই মেলেনি চিতাবাঘটির। উত্তেজতি জনতা লাঠিসোঁটা নিয়ে মারধর করে চিতাবাঘটিকে৷ এতে চিতাবাঘটির গায়ে গভীর ক্ষত সৃষ্টি হয়। এরপর বনকর্মীরা গিয়ে ঘুমপাড়ানি গুলি করে। চিতাবাঘটিকে খয়েরবাড়ি ব্যাঘ্র পুনর্বাসন কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়ার পথেই মৃত্যু হয়। প্রশ্ন উঠছে স্থানীয়দের মারধরেই নাকি গুমপাড়ানি গুলির ওভারডোজে মৃত্যু হয়েছে চিতাবাঘটির। এদিকে এদিনই বীরপাড়া-মাদারিহাট ব্লকের হান্টাপাড়া চা বাগানে আরেকটি চিতাবাঘকে খাঁচাবন্দি করা হয়। এই চিতাবাঘটিকে খয়েরবাড়ি ব্যাঘ্র পুনর্বাসন কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

[ডুয়ার্সের হান্টাপাড়া চা বাগানে ধরা পড়ল চিতাবাঘ, আতঙ্কিত শ্রমিকরা]

বৃহস্পতিবার ফালাকাটা ব্লকের রাইচেঙ্গা গ্রামে দুপুরে একটি চিতাবাঘ দেখতে পান স্থানীয়রা। গ্রামের কাদম্বিনি মোড়ের কাছে একটি আলু খেতে হামলা চালায় চিতাবাঘটি। সেখানে আলু খেতে দু’জনের উপর হামলা চালায়। এরপরই চিতাবাঘটিকে লাঠিসোঁটা দিয়ে মারধর করে। এতে চিতাবাঘটির গায়ে গভীর ক্ষত সৃষ্টি হয়। হুলস্থুল পড়ে যায় গোটা এলাকায়। খবর পেয়ে ফালাকাটা থানার পুলিশ ও বনকর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। তারা চিতাবাঘটিকে ঘুমপাড়ানি গুলি করে। কিন্তু তারপরও চিতাবাঘটি এক সিভিক ভলান্টিয়ারের উপর হামলা চালায়। এরপর চিতাবাঘটি নিস্তেজ হয়ে পড়ে। তারপর চিতাবাঘটিকে উদ্ধার করে খয়েরবাড়ি ব্যাঘ্র পুনর্বাসন কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়ার পথেই মৃত্যু  হয়। পরিবেশপ্রেমীদের আশঙ্কা ঘুমপাড়ানি গুলির ওভারডোজেই মৃত্যু হয়েছে চিতাবাঘটির। জানা গিয়েছে, আলু খেতে হামলায় জখম দুই ব্যক্তির নাম তপু দাস ও মনোজিত মল্লিক। জখম সিভিক ভলান্টিয়ার-সহ তিনজনই ফালাকাটা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

[‘নরখাদক’ চিতাবাঘকে বাগে আনতে প্রয়োজনে হত্যার সিদ্ধান্ত বনদপ্তরের]

এদিকে বুধবার রাতে মাদারিহাট বীরপাড়া ব্লকের হান্টাপাড়া চা বাগানে একটি চিতাবাঘকে ঘোরাঘুরি করতে দেখেন স্থানীয়রা। জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের লংকাপাড়া রেঞ্জ থেকে বন দপ্তরের প্রশিক্ষিত ট্র্যাঙ্কুয়ালাইজার অর্থাৎ ঘুমপাড়ানি গুলি চালাতে ওস্তাদ এমন একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। বোমা-পটকা ফাটিয়ে চিতাবাঘ তাড়াতে শুরু করেন স্থানীয়রা। বনকর্মীরা চিতাবাঘ খুঁজতে বাগানে হন্যে হয়ে পড়ে থাকেন। কিন্তু চিতাবাঘের হদিশ পাওয়া যায়নি। শেষে এদিন সকালে আচমকা চা বাগানে ছাগলের টোপ দিয়ে পেতে রাখা খাঁচায় চিতাবাঘটিকে খাঁচাবন্দি অবস্থায় দেখতে পান স্থানীয়রা। পরে বন দপ্তরের কর্মীরা এসে খাঁচা-সহ চিতাবাঘটিকে উদ্ধার করে খয়েরবাড়ি নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা শুরু করেন। জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের সহকারী বন্যপ্রাণ সহায়ক বিমল দেবনাথ বলেন, “চিতাবাঘটিকে খয়েরবাড়ি ব্যাঘ্র পুনর্বাসন কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়ার পথেই মৃত্যু হয়েছে।” জলদাপাড়ার  লঙ্কাপাড়া রেঞ্জের রেঞ্জ অফিসার বিশ্বজিৎ বিশয় বলেন, “যে চিতাবাঘটি খাঁচাবন্দি হয়েছে সেটিই ডুয়ার্সের বিভিন্ন এলাকায় মানুষের উপর আক্রমণ করছে কি না তা বলা যাচ্ছে না। বিশেষজ্ঞ দল চিতাবাঘটিকে দেখে তারপর কোথায় পাঠানো হবে সেই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।”



Bengali News Bengali News via Sangbad Pratidin

Comments

Popular posts from this blog

তোলা চেয়ে জেল থেকেই ব্যবসায়ীকে হুমকি ফোন গব্বর-রমেশের

‘পাক সহায়তায় মোদিকে ক্ষমতাচ্যুত করতে চাইছে কংগ্রেস’, আক্রমণ প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর

পেট্রোল ছাড়াই চলবে বাইক, দিশা দেখালেন নদিয়ার স্কুল মাস্টার