পূর্ব বর্ধমান জেলাজুড়ে জলাতঙ্কের টিকার আকাল, বিপাকে রোগীরা
ধীমান রায়, কাটোয়া: রাস্তার কুকুরদের সংখ্যা ক্রমশ বেড়েই চলেছে। তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে কুকুরে কামড়ানোর ঘটনাও। অথচ পূর্ব বর্ধমান জেলায় কার্যত সংকট চলছে জলাতঙ্ক রোগের টীকার। গ্রামীণ স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে ব্লক স্তরের হাসপাতাল। মহকুমা হাসপাতাল থেকে জেলা হাসপাতাল। সর্বত্র একই দৃশ্য। প্রায় দু’তিন মাস ধরে সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলির প্রায় সর্বত্র অমিল আ্যন্টি র্যাবিস ভ্যাকসিন বা জলাতঙ্ক রোগের টিকা। ফলে কুকুরে কামড়ানো রোগীরা সংকটে পড়েছেন। কেউ কেউ বাজার থেকে চড়া দাম দিয়ে আ্যন্টি র্যাবিস ভ্যকসিন কিনে কাজ চালাচ্ছেন। তবে সবচেয়ে সমস্যায় পড়েছেন গরিব রোগীরা। তাঁরা কার্যত বিনা চিকিৎসাতেই দিন কাটাচ্ছেন। যদিও পূর্ব বর্ধমান জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রণব রায় বলেন, “এই সমস্যা শুধু এ জেলার নয়, রাজ্য জুড়েই এই সংকট চলছে। সরকারিভাবে সহবরাহ না থাকার জন্যই স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে জলাতঙ্ক রোগের টীকা এখন চাহিদামত পাওয়া যাচ্ছে না। আশা করি এক দেড় সপ্তাহের মধ্যে সমস্যা মিটে যাবে।”
[রক্ত পরীক্ষার ভুল রিপোর্টে এইডসের আতঙ্ক ছড়াল হাওড়ায়]
স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে নভেম্বর মাস থেকেই আন্টি র্যাবিস ভ্যাকসিনের আকাল শুরু হয়েছে। বর্তমানে কাটোয়া মহকুমা এলাকার কোনও গ্রামীণ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে জলাতঙ্ক রোগের টীকা পাওয়া যাচ্ছে না। কাটোয়া হাসপাতালেও এনিয়ে নোটিসও টাঙিয়ে দেওয়া হয়েছিল। কাটোয়া হাসপাতাল সুপার রতন শাসমল বলেন, “দপ্তর থেকে জলাতঙ্ক রোগের টিকা সরবরাহ নেই। আমরা বাজার থেকে কিনে কিছুদিন কাজ চালাচ্ছি।” হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে দৈনিক গড়ে ৩০-৩৫ জন জলাতঙ্কের টিকা নিতে আসেন। বর্তমানে গ্রামীণ এলাকায় টিকা সংকটের কারণে কাটোয়া হাসপাতালে গড়ে ১৭৫-১৮০ জন রোগী টীকা নিতে আসছেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নিজস্ব ফান্ড থেকে কিনে কতদিন চালাতে পারবে তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ভাতার গ্রামীণ হাসপাতাল, আউশগ্রাম, মঙ্গলকোট প্রভৃতি হাসপাতালে প্রায় তিনমাস ধরে জলাতঙ্ক টিকা পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে কার্যত হাহাকার পড়ে গিয়েছে রোগীদের মধ্যে। কালনা হাসপাতালের সুপার ডা: কৃষ্ণচন্দ্র বড়াই বলেন, “কালনা হাসপাতালে আন্টি র্যাবিস ভ্যকসিন কিছুদিন আগে পর্যন্ত ছিল। কিন্তু এখন আর নেই। এটা শুধু আমাদের সমস্যা নয়। হুগলি নদীয়া প্রভৃতি জেলাতেও সরকারি হাসপাতালে টিকার স্টক শেষ হয়ে গিয়েছে। সে সমস্ত হাসপাতালে কিছু মজুত রয়েছে সেখানে গিয়ে অন্যান্য হাসপাতাল টিকা নিয়ে আসছে। এভাবেই চলছে। সরকারিবভাবে সরবরাহ না করা পর্যন্ত পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে না।”
[ বাধা নয় পরিকাঠামো, পিত্তনালিতে বিরল অস্ত্রোপচার বাঁকুড়া মেডিক্যালে]
Bengali News Bengali News via Sangbad Pratidin
Comments
Post a Comment