চাকরির আবেদনের ফাঁদ, বাংলাদেশ ব্যাংকের অর্থ হাতাল হ্যাকাররা

সুকুমার সরকার, ঢাকা: বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির আগে চাকরি চেয়ে ছলনার আশ্রয় নিয়েছিল আন্তর্জাতিক হ্যাকার চক্র। ২০১৪ থেকেই বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক-সহ একাধিক বাণিজ্যিক ব্যাংক নিয়ে অনলাইনে গবেষণা করেছিল হ্যাকাররা। পরে ২০১৬-র ৪ ফেব্রুয়ারি ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউইয়র্কে রক্ষিত বাংলাদেশ ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট থেকে ১০ কোটি ১০ লাখ ডলার গায়েব করে হ্যাকার গোষ্ঠীটি। এমনই জানিয়েছে এফবিআই৷

[এক টিকিটেই ট্রেন থেকে জাহাজ! অভিনব ভাবনা হাসিনা সরকারের ]

ঠিক কীভাবে এই চুরির ঘটনাটি ঘটেছিল? ক্যালিফোর্নিয়া ডিসট্রিক্ট কোর্টে একটি ফৌজদারি মামলা দায়ের করে এফবিআই এই ব্যাখ্যা দিয়েছে। মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০১৪-র ৭ অক্টোবর থেকে বাংলাদেশের বিভিন্ন ব্যাংককে টার্গেট বানিয়েছিল হ্যাকাররা। রিপোর্টে এই সাইবার হামলার পিছনে পার্ক জিন হিয়ক নামে উত্তর কোরিয়ার এক নাগরিককে দোষী সাব্যস্ত করে এফবিআই। বাংলাদেশ ব্যাংকের যন্ত্রপাতি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে এবং ইলেকট্রনিক তথ্য ও প্রমাণাদি জোগাড় করেছে গোয়েন্দা সংস্থাটি৷ তাঁরা জানতে পেরেছে রিজার্ভ চুরির জন্য সিস্টেমে অনুপ্রবেশ করতে মূলত চারটি ইমেল অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করেছিল হ্যাকাররা। ২০১৫ থেকে এসব ইমেলের মাধ্যমেই চাকরির সুযোগ চেয়ে আবেদন করা হয় বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তাদের৷ তাতে থাকত সিভি, কাভার লেটার-সহ বিস্তারিত আবেদনপত্র৷ এফবিআই জানিয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের কম্পিউটার নেটওয়ার্কে এই ইমেল অ্যাকাউন্ট থেকে প্রায়শই এমন স্পিয়ার ফিশিং ইমেল পাঠানো হত। ছদ্মবেশে প্রতারণা ও জালিয়াতি করে অর্থ হাতিয়ে নিতে মূলত স্পিয়ার ফিশিং ইমেইল ব্যবহার করা হয়েছিল। রিপোর্টে বলা হয়েছে, yardgen@gmail.com থেকে ২০১৫-র ২৯ জানুয়ারি বাংলাদেশ ব্যাংকের ১৬ জন কর্মকর্তাকে একই ইমেলে পাঠানো হয়েছিল। ওই বছর ২৩ ফেব্রুয়ারি এই ইমেল থেকেই কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ১০ জনকে দু’টি ইমেল করা হয়৷

[প্রলোভন দেখিয়ে স্মার্ট মহিলাদের মাদক পাচারের ‘চাকরি’তে নিয়োগ]

এরপর ২০১৫-র মে মাসে ফিলিপিন্সে ভুয়ো নামে বেশকিছু ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলা হয় এবং ওইসব অ্যাকাউন্টে ৮১ মিলিয়ন বা আট কোটি ১০ লক্ষ মার্কিন ডলার অর্থ পাঠানো হয়। এরপর ২০১৬-র ৬ ফেব্রুয়ারি, হ্যাকাররা সুইফট সার্ভার থেকে কিছু বার্তা ডিলিট করতে একটি ম্যালওয়্যার ব্যবহার করে। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে এর আগের দিন অর্থাৎ ৫ ফেব্রুয়ারি সার্ভার বন্ধ করে দেওয়া হয়। ফলে পরের দিন সার্ভার চালু হলেও ম্যালওয়্যারটি সব বার্তা ডিলিট করতে ব্যর্থ হয়। আর অসাবধানতাবশত হ্যাকারদের রেখে যাওয়া প্রমাণ নজরে আসে এফবিআই-এর গোয়েন্দাদের৷ রিপোর্টে বলা হয়েছে, সনি পিকচার্স এন্টারটেইনমেন্ট, ভিয়েতনাম, ফিলিপিন্স, আফ্রিকা, সাউথ-ইস্ট এশিয়ার ব্যাংকে হ্যাকিংয়ের ক্ষেত্রেও একই ধরনের প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছিল৷



Bengali News Bengali News via Sangbad Pratidin

Comments

Popular posts from this blog

দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন, বেকারত্ব কমানো হাসিনার নয়া চ্যালেঞ্জ

ভারতীয় মহিলা দলে শেষ পাওয়ার জমানা, নতুন কোচের খোঁজে বোর্ড

কাঠমিস্ত্রীকে কিডন্যাপ করে খুনের হুমকি, গ্রেপ্তার ছয় যুবতী