বিপদসীমা বোঝাতে দিঘার সমুদ্রে বেলুন ভাসাবে প্রশাসন

রঞ্জন মহাপাত্র, কাঁথি: সমুদ্রে নামলে আর দুর্ঘটনা নয়। দিঘায় দুর্ঘটনা এড়াতে এটাই যেন স্লোগান হয়ে দাঁড়িয়েছে জেলা প্রশাসনের। মাইকিং থেকে শুরু করে জরিমানার বিধান, দিঘায় সমুদ্রতটে দুর্ঘটনা ঠেকাতে এই সব পদক্ষেপ ইতিমধ্যেই গ্রহণ করে ফেলেছে জেলা প্রশাসন৷ এবার বড়দিনের আগে আরও এক অভিনব কৌশল নিল প্রশাসন। পর্যটকদের চোখে আঙুল দিয়ে সমুদ্রের বিপদসীমা বোঝাতে সমুদ্রে ভাসানো হচ্ছে হলুদ রঙের লম্বা লম্বা বেলুন। তা যেমন সমুদ্রতট থেকে দেখা যাবে, আবার সেই ভাসানো বেলুনের কাছাকাছি কোনও পর্যটক পৌঁছালেও তার গায়ে লেখা সাবধানবার্তা চোখের সামনে ভাসবে।

[ভাতারে দলীয় প্রচারের ফ্লেক্স ভাষা বিভ্রাট, বিপাকে তৃণমূল]

বেলুনের গায়ে লেখা রয়েছে ‘এই লাইনটি অতিক্রম করিবেন না’। ভিন রাজ্য ও দেশের পর্যটকদের জন্য সতর্কবার্তা লেখা রয়েছে ইংরাজিতেও। বিপদ এড়াতে দিঘার সমুদ্রতটে নানা সতর্কবার্তা থাকলেও সমুদ্রে এই প্রথম। রাজ্য পর্যটন দপ্তরের আর্থিক সহায়তায় পুরানো দিঘার সমুদ্রে হলুদ রং এর বেলুন ভাসানোর কাজ শুরু হয়েছে। নির্দিষ্ট সীমার বাইরে স্নান করলেই পর্যটকদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে প্রশাসনের পক্ষ থেকে। দিঘা সমুদ্রে দুর্ঘটনা আটকাতে কোমর জলের বেশি নামলে গ্রেপ্তার করার নির্দেশ দিয়েছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পুলিশ। জানা গিয়েছে, প্রায় তিরিশ হাজার বেলুন রাখা হবে সমুদ্রে। প্রতি পর্যায়ে থাকবে ১৫ হাজার বেলুন। সমুদ্র গভীর হচ্ছে তা পর্যটকদের বোঝানোর জন্য বেলুনের গায়ে লেখা থাকবে বিপদ। সতর্কতা সত্ত্বেও যদি কোনও পর্যটক নিয়মভঙ্গ করেন তাহলে তাঁকে পড়তে হবে কড়া শাস্তির মুখে। প্রয়োজনে গ্রেপ্তারও করা হতে পারে বলে জানানো হয়েছে প্রশাসনের তরফ থেকে।

[সোদপুর স্টেশনে মাওবাদী পোস্টার, এলাকায় তীব্র চাঞ্চল্য]

পর্যটকরা যাতে সচেতন থাকেন সেজন্য সৈকতে মাইকিং করা হবে। মদ্যপান করে সমুদ্রে নামলে পর্যটকদের জরিমানা প্রয়োজনে গ্রেপ্তারও করা হতে পারে। দিঘা-শংকরপুর উন্নয়ন পর্ষদের সদস্য তথা জেলার সভাধিপতি দেবব্রত দাস জানান, পর্যটকদের সমুদ্রে বিপদ সংকেত জানান দিতেই বেলুন ভাসানোর কাজ শুরু হয়েছে। এরফলে পর্যটকেরা যেমন সতর্ক হবেন তেমনই পুলিশি নজরদারির মধ্যে সমুদ্র স্নান সম্ভব হবে। উল্লেখ, গত কয়েকমাস আগে দিঘা সমুদ্র সৈকতে জলে ডুবে প্রাণ হারিয়েছেন ৬ জন পর্যটক। প্রায় ১২ জন তলিয়ে যাওয়া পর্যটককে উদ্ধার করেছে নুলিয়ারা। সমুদ্র সৈকতে বিপুল পরিমানে নুলিয়া ও সিভিক ভলেন্টিয়ার নিয়োগ করার পরেও মৃত্যু মিছিল কিছুতেই ঠেকানো যাচ্ছে না। যার মূল কারণ, বিপজ্জনক ঢেউয়ের মধ্যে দাঁড়িয়ে সেলফি তোলার প্রবণতা, বেপরোয়া মনোভাবের জেরে সমুদ্রের অনেক গভীরে নেমে গিয়ে সাঁতার কাটা, আর সব থেকে বিপজ্জনক হল মদ্যপ অবস্থায় নিয়ন্ত্রনহীন ভাবে সমুদ্র স্নানে নামা। তাই হাজারও সাবধানতা অবলম্বন করার পরেও পর্যটকদের মৃত্যুর ঘটনা কিছুতেই ঠেকানো না যাওয়ায় চিন্তার ভাঁজ পড়ে যায় পুলিশ কর্তাদের কপালে। তাই এই অবিনব প্রয়াশ।



Bengali News Bengali News via Sangbad Pratidin

Comments

Popular posts from this blog

তোলা চেয়ে জেল থেকেই ব্যবসায়ীকে হুমকি ফোন গব্বর-রমেশের

‘পাক সহায়তায় মোদিকে ক্ষমতাচ্যুত করতে চাইছে কংগ্রেস’, আক্রমণ প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর

পেট্রোল ছাড়াই চলবে বাইক, দিশা দেখালেন নদিয়ার স্কুল মাস্টার