ঠাকুরনগরে মতুয়াদের পাশে মোদি, নাগরিকত্ব বিলে চাইলেন তৃণমূলের সমর্থন

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: যেমনটা আশা করেছিলেন, তেমনটাই পেলেন। ঠাকুরনগরের সভা থেকে মতুয়াদের নাগরিকত্বে অধিকার প্রাপ্তি নিশ্চিত করার বার্তা দিলেন প্রধানমন্ত্রী। বললেন, ‘বিভিন্ন পরিস্থিতিতে ভিনদেশ থেকে এদেশে আশ্রয় নেওয়া এবং দীর্ঘ সময় ধরে বসবাসকারীর প্রত্যেকের অধিকার রয়েছে, নাগরিকের সম্মান পাওয়ার। তার জন্যই আমরা নাগরিকত্ব বিলে সংশোধনী আনছি। তৃণমূলকে বলছি, আপনারা এই সংশোধনী সমর্থন করুন। তাহলে সকলে ভালভাবে থাকতে পারবেন।’

দীর্ঘ রাজনৈতিক টানাপোড়েন শেষে শনিবার বেলা সাড়ে এগারোটার কিছু পরে দমদম বিমানবন্দরে নামেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সেখান থেকে চপারে উড়ে যান ঠাকুরনগর। ঠাকুরবাড়িতে গিয়ে মতুয়া মহাসংঘের প্রধান বড়মা বীণাপানি দেবীর সঙ্গে অল্প সময়ের জন্য দেখা করেন। বীণাপানি দেবী অসুস্থ থাকায় বেশিক্ষণ কথা বলতে পারেননি। তবে মতুয়া প্রধানের থেকে আশীর্বাদ নেন মোদি।বড়মার আশীর্বাদ পেয়ে তিনি গর্ব বোধ করছেন, দেখা করার পর জানান প্রধানমন্ত্রী। তারপর ঠাকুরবাড়ির নাটমন্দিরে পুজো দিয়ে পৌঁছে যান কামনা সাগর পাড়ের শ্রীধাম ময়দানে।  সেখানেই সভার আয়োজন। ততক্ষণে মাঠ ভরে গিয়েছে সমর্থকদের ভিড়ে।

MODI-CHAOS

                                           স্ত্রী ও শিশুপুত্রকে খুন, দেহ নিয়ে দীর্ঘক্ষণ বসে রইল অভিযুক্ত

মঞ্চে প্রধানমন্ত্রীকে আহ্বান জানান স্থানীয় বিজেপি নেতা তথা ঠাকুরবাড়ির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সদস্য শান্তনু ঠাকুর। প্রধানমন্ত্রীকে উত্তরীয়, মতুয়াদের বিশেষ একটি মালা পরিয়ে দেওয়া হয় । এরপর বক্তব্য রাখতে ওঠেন প্রধানমন্ত্রী। প্রথমেই বাংলায় ভূমিকা করে বলেন, ‘আমার প্রিয় ভাই ও বোনেরা, ঠাকুরনগরের মাটি পবিত্র মাটি। ঠাকুর গুরুচাঁদের মাটি। এই মাটিকে প্রণাম। সব মনীষীদের নামে প্রণাম। এখানে আসতে পেরে আমি ধন্য।’ এরপর ঠাকুরবাড়ির প্রবাদপ্রতিম ব্যক্তিত্ব হরিচাঁদ, গুরুচাঁদ ঠাকুরের অবদানের কথা উল্লেখ করে এর সামাজিক গুরুত্ব ব্যখ্যা করেন। সেইসঙ্গে টেনে আনেন গ্রামীণ ভারতের প্রসঙ্গ। প্রধানমন্ত্রীর কথায়, ‘স্বাধীনতার এত বছর পরও গ্রামগঞ্জের ততটা উন্নয়ন হয়নি, যতটা হওয়ার কথা ছিল। পশ্চিমবঙ্গের অবস্থা আরও খারাপ। কিন্তু বর্তমান সরকার গ্রামাঞ্চলের উন্নয়নে, কৃষকদের উন্নয়নে তৎপর। তাই আমরা তাঁদের জন্য অনেক বড় প্রকল্প এনেছি। গতকাল বাজেট থেকেই ঘোষণা করা হয়েছে। ছোট কৃষক পরিবার, শ্রমিক, মজুরদের সরাসরি টাকা দেব। কোথাও কোনও মধ্যসত্ত্বভোগী থাকবে না। পশ্চিমবঙ্গের কৃষক, শ্রমিকরাও এর সুবিধা পাবেন। দ্রুতই প্রথম কিস্তির ২ হাজার টাকা সরাসরি আপনাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পৌঁছে যাবে।’ এ প্রসঙ্গে কংগ্রেসকে মোদির কটাক্ষ, ‘কংগ্রেস রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশে এমনভাবে ঋণমকুব করার কথা বলছে, যেন কোনওদিনই ঋণের সুদ দিতে হয়নি কৃষক সম্প্রদায়কে।’ এদিন মাঠ উপচে পড়া জনসমাগম দেখে তাঁর মন্তব্য, ‘মাঠটা একটু ছোট হয়ে গিয়েছে। আপনাদের এত ভিড় দেখে আমি আপ্লুত। আপনারা আমার শুভেচ্ছা জানবেন। আমরা মনে হচ্ছে, এসব দেখে দিদি ইর্ষাকাতর হয়ে পড়বেন, কিছুটা ভয়ও পেয়ে যাবেন।’

                                                       সমঝোতার বার্তা দিয়ে গোপন আস্তানা থেকে মুখ্যমন্ত্রীর প্রশংসা গুরুংপন্থীদের

এরপরই নাগরিকত্ব বিলের উল্লেখ করে সরাসরি তৃণমূলকে তাঁর বার্তা, এই বিল সমর্থন করলে, অনেকে এদেশে ভালভাবে থাকতে পারবেন। যথাযথ সম্মান নিয়ে দেশের একজন হয়ে থাকতে পারবেন। এদিকে প্রধানমন্ত্রীর বক্তৃতা চলাকালীনই সভার মাঠে ভিড় ঘিরে বিশৃঙ্খলা শুরু হয়। ভিআইপি জোনের ব্যারিকেড ভেঙে কেউ কেউ মঞ্চের দিকে এগোতে চাইলে নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। ধাক্কাধাক্কিতে আহত হন বেশ কয়েকজন। ঠাকুরনগরের সভা শেষে প্রধানমন্ত্রী উড়ে যান দুর্গাপুর।



Bengali News Bengali News via Sangbad Pratidin

Comments

Popular posts from this blog

তোলা চেয়ে জেল থেকেই ব্যবসায়ীকে হুমকি ফোন গব্বর-রমেশের

শ্রীলঙ্কা-অস্ট্রেলিয়া টেস্টে ‘হিউজ’ আতঙ্ক, মাথায় বল লেগে হাসপাতালে ক্রিকেটার

বেঙ্গল সাফারি পার্ক থেকে উধাও চিতাবাঘ, আতঙ্ক শিলিগুড়িতে